শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেড় শ ছাড়িয়েছে, নতুন আরও ১০ হত্যা মামলা

Photo of author

By Nahid

শেয়ার করুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় এক সাংবাকিদকসহ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ১০টি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এবং গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন থানায় এসব মামলা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে আজ রোববার পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে ১৭৭টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৫৭টিই হত্যা মামলা। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া তাঁর নেতৃত্বাধীন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় সাবেক দুই আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ বিভিন্ন পেশার শীর্ষস্থানীয় ২৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

গুলি করে সাংবাদিককে হত্যায় মামলা

ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ রোববার এ মামলা করেন মেহেদীর বাবা মোশাররফ হোসেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে যান ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক মেহেদী হাসান। খবর সংগ্রহের জন্য তিনি যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কের টোল প্লাজার পাশে অবস্থান করছিলেন। তখন মেহেদী পুলিশের নির্বিচারে গুলি করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশ মেহেদী হাসানকে লক্ষ্য করে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ইকবাল হোসেন, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান ও পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই অভিজিৎ পোদ্দারসহ আরও ১০ জন এসআইকে আসামি করা হয়েছে।

বাড্ডায় কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ইম্পেরিয়াল কলেজের ছাত্র জিল্লুর রহমান শেখকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ রোববার এ মামলা করেন জিল্লুর রহমানের আত্মীয় আহম্মেদ হোসেন লিটন। মামলায় বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা গত ১৮ জুলাই দুপুরে বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সমবেত হন। তখন স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মীরা পিস্তল দিয়ে ছাত্র–জনতার ওপর হামলা করেন। তখন জিল্লুর রহমানের গলায় গুলি লাগে। পরে তাঁকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

‘মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে কিশোরের মৃত্যু’

ইমন নামের এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে ইমনের মা কুলসুম বিবি বাদী হয়ে আজ রোববার এই হত্যা মামলা করেন। মামলার আরজিতে বলা হয়, গত ২০ জুলাই বিকেলে বাড্ডার প্রগতি সরণিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার ছাত্র–জনতা অবস্থান নিয়েছিলেন। তখন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক আইজিপিসহ অন্য ব্যক্তিদের নির্দেশে পুলিশ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্র–জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। তখন কিশোর ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, গুলশান বিভাগের সাবেক উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম, সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও রাজন কুমার সাহা এবং বাড্ডা থানার সাবেক ওসি ইয়াসীন গাজীকে আসামি করা হয়েছে।


শেয়ার করুন

Leave a Comment